আমি মো: নাজমুল হাসান তপু। Scholarship School BD-র প্রতিষ্ঠাতা।কানাডায় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডি করছি। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ি বলে মন আমার যান্ত্রিক নয়। বরং আমি কিছুটা কল্পনাপ্রবণ মানুষ, বাংলা কবিতা লিখতে ভালোবাসি।
রবীন্দ্রনাথের সুন্দর বাংলা শব্দশৈলী আমাকে মুগ্ধ করে। তার মতো করে কবিতা লিখার চেষ্টা করি। আমাকে শুদ্ধ পুরোনো ধাঁচের বাংলা অনেক টানে। তাই আমার কবিতায় সংস্কৃত শব্দ ও পুরাতন বাংলার ব্যবহার বেশি।
স্কুল কলেজে থাকতে বাংলা অত মন দিয়ে পড়তাম না যেমনভাবে ফিজিক্স, ম্যাথ পড়তাম। বাংলা শুধু পরীক্ষায় পাশের জন্য পড়তাম। কখনো ভাবিনিও সেই আমি বাংলা কবিতা লিখবো! আমার বাংলাজ্ঞান খুবই সামান্য। সেই সামান্য জ্ঞানে নিচে আমার লিখা কিছু বাংলা কবিতা।
কবিতা: প্রেয়সীর আভরণ
লিখা: মো নাজমুল হাসান তপু
দুর্বার এক জোড়া আঁখির চাহনির অপ্সরা অঞ্জলিবালা,
হাতে দেব তোমায় আধো আলোছায়ায় মুছে যাওয়া ডুবো সুর্যের রক্তিমতার মালা,
কপোলে ছুইয়ে দেব চন্দ্রিমার শুভ্রতা, সাথে জোনাকি কেশবালায় ,
চুম্বনে ভালোবাসায় মাখিয়া সিক্ত করিয়া কাটিয়া যাবে মোর সারাবেলা,
ঘোরে মোহে কাটে এই কল্পনা মোর, মিটাতে নির্জনতা নি:সংগতার জ্বালা।।
মোহনীয় নির্জতার পাতায় অংকিত তোমার স্মৃতি,
অকপটে বলতে না পারা সেই অমলিন আত্নার তব গীতি,
আজি আরাধ্য আরাধনার আলোকিত মুখ খানির দ্যুতি,
স্পর্শিত শিহরিত আমি, যেন এইভাবেই হয় যেন মোর ইতি।।
কবিতা : সাঁঝের প্রেয়সী
লিখা: মো: নাজমুল হাসান তপু
প্রেয়সীর দর্পণ উজিল সাঝেঁর কিরণে,
বকুল গন্ধমাখা সমীরণে কি ভীষণ মায়াজালে,
তব আয়তলোচনের উত্তাল হিল্লোলে,
রাঙা আঁচল উড়ায়ে উদ্দাম কেশরাজি লয়ে,
সুহাসিনী মদিরাক্ষী প্রিয়া মোর সুসজ্জিত আভরণে ।।
আবিষ্টমনে সঁপিলে মোর বাহুডোরে,
প্রেমের ইন্দ্রজালে ভীষণ এক ভ্রমে,
মম হিয়া স্পর্শিয়া হারাইলে অনুপলে,
কেবলি পুড়াইতে যাতনার অনলে,
অনিমিখ নয়নে হেরিয়া প্রেমের অভিলাষে।।
চকিত নয়নে খুঁজিয়া ফিরি হেমন্তের শুভ্র নীরদে,
কালের ক্ষণে প্রতীক্ষায় প্রেয়সীর পথপানে
আসিবে ফিরিয়া শীখন্ডীনি বেশে,
জুড়োতে বসুধাতে মোর মায়াকাননে,
ফের উঠিবে সুর বীণায়, বাজিবে বাঁশী মোর ত্রিভুবনে।।
আজি প্রেয়সীর মিলনের এই উচ্ছাস লগ্নে,
সন্ধ্যামালতী গন্ধবিধুর সাঁঝে মধুর নন্দনরাগে,
প্রিয়ার তরুলতাসদৃশ কটী আলিংগনে,
চন্দ্রিমার নৃত্যতালে পুর্নিমার শ্রাবণশর্বরীতে ,
স্পর্শিলাম, ডুবিলাম প্রিয়ার সিঞ্চিত অধরে।।
কবিতা: সন্ধ্যাবর্তি
লিখা: মো নাজমুল হাসান তপু
দর্শিলে ঘোর অমানিশায় সাঝের তারায়,
স্পন্দিলে মোর হিয়ার শুভ্র নীরদমালায়,
তপ্ত অজানা নি:শ্বাস ভালোবাসার পংক্তিমালায়,
রাশি রাশি অব্যক্ত উদ্বেলিত উচ্ছাস কণ্ঠমালায়।।
গোধুলীর লগ্নে সাজিলো সেঁজুতি দিনমণির লালিমায়,
বুলবুলির কণ্ঠে শুধিলো আমায় নিখাদ স্নিগ্ধতায়,
তিমির কেশরাজি জ্বলিছে তাহার জোনাকীর আলোকচ্ছটায়,
নিবিড় প্রেমের ভাবাবেগ ডুবিছে মাধুকরি সেঁজুতির মহিমায়।।
সন্ধ্যাবর্তির কিরণ তব ললাটের ঔর্বাগ্নি,
অস্তগামী দিবাকরের শেষ পল যেন বীতাগ্নি,
সেঁজুতির অনুপল সান্নিধ্যে জ্বলিছে মনের দাবাগ্নি।।
কবিতা: স্মৃতির স্বপন
লিখা: মো: নাজমুল হাসান তপু
নেবে কি আমায় সেই স্বপ্নালু সোপানে,
প্রতীক্ষায় যায় দিন মোর মর্ম দহনে,
এসেছিল এক জ্যোতিমালা স্মৃতির গগনে,
প্রেম রঙে রাঙিয়েছিল মোর বিরান ভুবনে,
কি নিদারুন এক স্নিগ্দ্ধতা তাহার আয়তলোচনে।
জড়িয়েছিলে এক নীলিমার শাড়িতে, তব কুন্তলরাশি ললাটে,
বিলীন হয়েছিলেম তাহার ওষ্ঠের লালিমাতে,
অনুভবে স্পন্দিতে চাই তোমার হাসির লহরীতে,
দেবে কি আমায় তোমার চাঁদমুখ স্পর্শিতে?
মেঘে ভাসিয়ে দিলেম মোর ভালোবাসার চুম্বন সুদূর দিগন্তে,
ঘুমের ঘোরে আলতো ছুঁয়ে দেব পেলব কপোলে,
পড়িয়ে দেব আঁধারের কাজল রাজকন্যার নিমীলিত নয়নে,
রজনী পার হয়ে যাবে দুজনার ভলোবাসার তপ্ত নি:শ্বাসের অনলে।