একটা কাল্পনিক গল্প বলি। এক বাংলাদেশী দেশের বাইরে গেলো। দেশের বাইরে গিয়ে কোনো রকম নিজ খরচে কমার্শিয়াল কোন ছোট খাটো ছাপড়া মার্কা প্রতিষ্ঠান থেকে টেনেটুনে শর্ট কোর্স ডিপ্লোমা টাইপের কিছু নিলো। সাথে ওসি-ডিসি (অনিয়ন কাটিং এন্ড ডিশ ওয়াশিং) এর জব করতে করতে একসাথে পিয়াজ কাটার সুবাদে রেস্টুরেন্টের আরেক সাদা চামড়ার পিয়াজ কাটারের সাথে পরিচয় হলো। আবার তার বাসার পাশে একটা দোকানের মালিক বুড়া এক শেতাঙ্গের সাথে পরিচয় হলো।
তার বাংলা মাথায় চিকন বুদ্ধি মাথায় আসলো। সে কি করল, একটা ফেসবুক পেইজ খুলে ইয়ুথ অর্গানাইজেশন টাইপের কিছু বানায়ে ফেললো। তারপর কি করলো ওই তার পিঁয়াজ কাটা সাদা চামড়ার সহকর্মীকে ফেসবুক লাইভে এনে ধুমায়ে ইংরেজিতে মোটিভেশন দিতে বললো। এই প্রোগ্রামের মার্কেটিং করলো এভাবে যে অমুক দেশের স্কিল ডেভেলাপ এক্সপার্ট অমুক লাইভে এসে সরাসরি কথা বলবে। তার টার্গেট হলো বাংলাদেশের ইউনিভার্সিটির আন্ডারগ্রেড স্টুডেন্ট।
সে এসব স্টুডেন্টদেরকে তার লাইভ গুলোর একটা চটকদার নামকরন করে ছড়ায়ে দিতে বললো, আর টোপ হিসেবে সেই বাংলাদেশী আন্ডারগ্রেড স্টুডেন্টদের কান্ট্রি ডিরেক্টর টাইপের বিশাল বড় বড় চটকদার পোস্ট দিলো। তারপর অল্পদিনেই বাংলাদেশের ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডে তাঁর লাইভ গুলা শেয়ার হতে থাকল। সে কায়দা করে তার সাদা চামড়ার দোকানদাঁর বুড়া লোককে লাইভে এনে স্কিল এক্সপার্ট হিসেবে কথা বলার সুযোগ দিলো। যে লোক কোনোদিন স্কলারশিপ পায়নি লাইফে সে স্কলারশিপ, মোটিভেশন, ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কথা বলা শুরু করে দিলো।
আমাদের দেশের অবুঝ আন্ডারগ্র্যাড স্টুডেন্ট গুলা সাদা চামড়া, আর ইংরেজি শুনে পটে গেলো, অথচ মাথায় একবারও খেললো না সেই লোকের একাডেমিক কোয়ালিফিকেশন স্পষ্ট করে কোন দিন কেনই সে প্রকাশ করে না লাইভ আসার সময়, কিংবা যারা স্পিকার হিসেবে কথা বলতে আসে তাদের টাইটেল কেন এত ধোঁয়াশা মূলক চটকদার হয়- যেমন "স্কিল এক্সপার্ট", "পাবলিক ট্রেইনার" হাবিজাবি মার্কা ছাতা মাতা। কেন স্পেসিফিক একাডেমিক ইনফো দেয়া হয় না স্পিকারদের- যে কোন ভার্সিটিতে, কোন ডিগ্রি ,কোন সাবজেক্ট নিয়ে পড়ছে? অথচ ইন্টারন্যাশনাল যেকোন সামিট/ কনফারেন্স গেস্ট স্পিকার কথা বলার আগেই তার ফুল একাডেমিক ও প্রফেশনাল বায়োগ্রাফি ডিটেলস বলে তাকে কথা বলতে বলা হয়!
এরপরেও আমাদের আন্ডারগ্রেড স্টুডেন্টগুলো বড়োই অবুঝ। এসব কথা তাদের মাথায় আসে না। কান্ট্রি ডিরেক্টর, জোনাল হেড টাইপের চটকদার পোস্ট পেয়ে আমাদের বাংলাদেশের ভার্সিটির আন্ডারগ্রেড স্টুডেন্টগুলাও খুব খুশি, তাই আর ওসব প্রশ্ন মাথায়ও আসে না। এখন একেকজন এর কাজ হলো আরো ১০ জন বন্ধু বান্ধব ধরে বেঁধে পটিয়ে আরো ১০ জনকে জয়েন করানো, লাইভ শেয়ার দেয়ানো।
এইভাবে ধীরে ধীরে ওই চিকন বুদ্ধির লোকের ভার্চুয়াল সাম্রাজ্য তৈরী হয়ে গেল। এখন সে রেগুলার মোটিভেশনাল ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট বক্তা এবং স্কিল এক্সপার্ট!! আমাদের দেশের পোলাপান গুলা এতটা নাইভ, এতটা ইজি এদের ম্যানিপুলেট করা, যে দেশের বাইরের একটা ট্রাক ড্রাইভারকে লাইভে এনে স্কিল এক্সপার্ট হিসেবে এনে ঝাড়া ১০ মিনিট ইংলিশ বলায়ে ভুঙভাঙ অনলাইন সামিট করলেই যে কেউ রাতারাতি ইয়ুথ লিডার বনে যেতে পারে, অথচ কেউ প্রশ্ন করবে না তার একাডেমিক কোয়ালিফিকেশন একচুয়ালি কি।!!
তোমরা যারা আন্ডারগ্রেড স্টুডেন্ট বিভিন্ন এক্সট্রা কারিকুলার অর্গানাইজেশনের সাথে জড়িত, দয়া করে অর্গানাইজেশনের প্রধানের সম্পূর্ণ একাডেমিক ডিটেলস -কোন ভার্সিটিতে পড়ছে, কি পড়ছে, নিজ খরচে পড়ছে নাকি স্কলারশিপ পাইছে, তার বর্তমান এফিলিয়েশন কি, গেস্ট স্পিকারের ফুল একাডেমিক বায়ো কি এগুলা যাচাই না করে অন্ধের মত কাউকে ফলো করা, এসব ভুঙ ভাঙ অনলাইন সামিটের শেয়ার করা থেকে বিরত থাকো।
উপরের কাহিনী কারো বাস্তব ঘটনার সাথে মিলে গেলে কেউ দায়ী নয়! লিখাটি লিখেছেন
Md Nazmul Hasan Topu, Founder, Scholarship School BD
PhD researcher, Electrical & Computer Engineering
University of British Columbia, Vancouver, Canada
লিখাটি শেয়ার করুন ও ইউটিউবে আমাদের টিপস গুলি ফলো করুন। প্রতিদিন স্কলারশিপ নিউজ, ও প্রফেসর ফান্ডিং টিপস, IELTS, GRE টিপস পেতে এখুনি জয়েন করুন Scholarship School BD Website: www.sschoolbd.com
Comments