top of page

অরোরা বোরিয়ালিস - প্রকৃতির সুন্দরতম আলোক-নাচন



ঊষ্ণ কম্বলের হাতছানি উপেক্ষা করে শীতের রাতে খোলা আকাশের নীচে একমনে বসে থাকা। এক ঝলক দেখার কি উদগ্রীবতা কিছু মানুষের। চাক্ষুস বাসনার উত্তাপে নীলাভ হিম শীতলতা যেন রক্তিম অঙ্গারসমবর্ণ ধারন করে।


হঠাৎ আকাশ ভেদ করে রাতের গভীরতার ক্যানভাসে আচড় কাটে রঙিন অরোরা বোরিয়ালিস। আমি ডাকি উত্তুরে-আলো। স্বপ্নিল আলোটায় কেমন এক স্বর্গীয় রূপ আছে। অপেক্ষার সার্থকতা হয় সবার।

সুর্য্যি মামার ভেতরটা জ্বলন্ত, ধারনার বাইরে। রাগ করলে কেউ কেউ হাতের কাছে যা-তা ছুড়ে মারেন। সুর্য্যি মামাও বাইরে থেকে সব সময় প্লাজমা গ্যাসের প্রবাহ এদিক ওদিক ছুড়ে মারেন। লোকজনের মন যেমন পজেটিভ নেগেটিভ হয়, এই প্লাজমাও তেমনি , কিন্ত গ্যাস অবস্থায়। পদার্থবিজ্ঞানি চাচ্চুরা এদেরকে সোলার উইন্ড ডাকেন। আমি আদর করে ডাকি "সুর্য্যি-বাতাস"।


সুর্য্যি-বাতাস আর উত্তুরে-বাতাসের অনেক তফাত! একটায় কাঠ-ফাটা জ্যৈষ্ঠের দুপুরে যেন পরান জুড়োয়। আরেকটায় নরকের দাবদাহ!


ছোট বেলায় বাসার বাইরে গেলে মাকে বলে যেতাম। টের পেতাম মায়ের মমতামাখানো অদৃশ্য আবরণ যেন চারিদিকে ঘিরে আছে। পৃথিবীর বায়ুমন্ডলকেও পরম-মমতায়ী চুম্বক ক্ষেত্র ঘিরে আছে। এ যেন পণ করেছে সকল অনিষ্ঠ থেকে মেদিনীকে রক্ষার।


তেজস্বী সুর্য্যি বাতাস যখন গ্রাস করতে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে পৌছায়, মমতাময়ী চুম্বক ক্ষেত্র তার সকল দর্পচুর্ণ করে বাধা দেয়। এই চুম্বকক্ষেত্র না থাকলে আমরা সকলেই কেএফসির মুরগির মত অঙ্গার-ঝলসিত হতাম।


সুর্য্যি-বাতাসের চার্জযুক্ত কনিকাগুলো পৃথিবীর চুম্বক ক্ষেত্রের মায়াবী জালে আটকে পড়ে ভু-বায়ুমন্ডলের মধ্যে। সেখানে অক্সিজেন নাইট্রোজেন আছে অনেক। সুর্য্যি-বাতাসের কনিকা গুলো অক্সিজেন নাইট্রোজেনের সাথে ঠোকা-ঠুকি খেতে শুরু করে। কনিকার সাথে কনিকার রসায়নের মায়াজালে সৃস্টি হয় আশ্চর্য এই স্বপ্নিল প্রতিপ্রভা - অরোরা বোরিয়ালিস। অনেকে নর্দান লাইট বলে। আমি বলি উত্তুরে-আলো।


মানুষে মানুষে ঠোকা-ঠুকি হলে তাতে গরল বের হয়। আর প্রকৃতির ঠোকা-ঠুকিতে রঙ বের হয়। অক্সিজেনের সাথে সুর্য্যি-বাতাসের ঠোকা লাগলে সবুজাভ, আর নাইট্রোজেনের সাথে হাল্কা নিল