প্রিডেটরি অনলাইন কনফারেন্স

কোভিড-১৯ সিচুয়েশনে এখন সব কনফারেন্স অনলাইনে হওয়ায় রিসার্চ নিয়ে অনেক অনভিজ্ঞ শিক্ষার্থীরা প্রিডেটরি কনফারেন্সগুলোর শিকার হচ্ছে বেশি। আবার অনেক শিক্ষার্থী কনফারেন্সের পোস্টারে international শুব্দটা দেখে আকৃষ্ট হয়ে সেই প্রিডেটরি কনফারেন্সের ক্ষপ্পরেই পরে যায়। অথচ international শুব্দটা লাগিয়ে দিলেই কিন্ত কনফারেন্স আন্তর্জাতিক হয়ে যায় না। সেসব চিহ্নিত করার কিছু উপায় নিয়েই এই লিখাটা। যারা রিসার্চের দুনিয়ায় সবে পা রেখেছেন, বা রাখতে যাচ্ছেন আশা করছি তাদের জন্য সহায়ক হবে।
প্রিডেটরি পাবলিকেশনের শিকার কারা হয় বেশি ?
বাংলাদেশের আন্ডারগ্র্যাডদের অনেক শিক্ষার্থীরা পিয়ার-রিভিউ, সাইটেশন, জার্নাল সাইটেশন রিপোর্ট (JCR), Social Science Citation Index (SSCI), Science Citation Index (SCI), Science Citation Index Expanded (SCIE) ইত্যাদি সম্পর্কে সম্যক ধারনা না থাকায় তারাই সবচে বেশি এই প্রিডেটরি পাব্লিকেশন এর শিকার হয়। দুর্ভাগ্যক্রমে, দেশের কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টিরাও সমানে প্রিডেটরি জার্নালে পাব্লিকেশন করেই যাচ্ছে , কার কত পাবলিকেশন ও প্রমোশন সেটা করতে গিয়ে।
প্রিডেটরি পাবলিকেশন কি? কারা আছে এর পিছনে?
ভাল-মন্দ সব খানেই ব্যবসা চলে এসেছে। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে, অনেক আগে থেকেই কিছু অসাধু লোক টাকা কমানোর ধান্ধায় এই প্রিডেটরি জার্নাল ও কনফারেন্স চালু করেছে, যার মধ্যে ইন্ডিয়া ও চায়না ভিত্তিক পাবলিকেশন গুলি একটু বেশিই ডমিনেন্ট ।
যেসকল কনফারেন্স ও জার্নাল মেইন স্ট্রিম রিসার্চ সায়েন্সটিস্ট ও রিসার্চ কমিউনিটিতে স্বীকৃত নয়, এবং যারা কিনা টাকার বিনিময়ে যেকোন কোয়ালিটিবিহীন অখাদ্য কুখাদ্য পেপার নামকাওয়াস্তে টাইমে দ্রুত পাবলিশ করে অনলাইনে তাদেরকে প্রিডেটরি পাবলিশার বলে এবং এই ধরণের পেপারকে প্রিডেটরি পেপার বলে। এগুলা যদি সিভিতে রাখেন, এবং সেই সিভি কোন ইউরোপ, আমেরিকার প্রফেসর দেখেন, আপনার জন্য ব্যাড ইম্প্রেশনের কারণ হবে।
এসব প্রিডেটরি পাবলিশারদের ওয়েবসাইটে কন্টাক্ট এড্রেসে রিজিওনাল অফিস হিসেবে আমেরিকা, ইউকে, অস্ট্রেলিয়ার ঠিকানাও দেয়া থাকে। কিন্ত এরা অপারেট করে এক জায়গা থেকে কিন্ত হয়তো সেই এড্রেস দেয়া থাকে না। পাবলিকেশন ফি এর বিনিময়ে, নাম-মাত্র সময়ে পেপার জমা দেবার ( হয়তো 1-2 সপ্তাহ এমনকি দিনে দিনে) এর মধ্যে এরা এক্সেপ্টেন্স নোটিফিকেশন পাঠিয়ে, ফি নিয়ে সাথে সাথে পাবলিশ করে দেয়! অথচ একটা ভালো জার্নালে পেপার রিভিউ হতে ১-৬ মাস+ লাগে এবং মাল্টিপল টাইম রিভিশনের প্রয়োজন হতে পারে। আপনি হয়তো মহাখুশি যে আপনার প্রথম পেপার এত দ্রুত রিভিউ হয়ে পাবলিশ হয়েছে তাও রিভিশন ছাড়া। তার মানে আপনার কাজটা সুপার ট্যালেন্টেড টাইপের কিছু একটা ছিল!অথচ এই পাবলিকেশনের কোন ভ্যালুই নেই।